Monday, December 10, 2012

শিরোনামহীন

৯ ডিসেম্বর ২০১২। সারাদেশে বিএনপি ঘোষিত অবরোধ কর্মসূচি। ভোর থেকেই জ্বালাও পোড়াও দিয়ে শুরু। এগুলো দেশের সব বিরোধী দলের কর্মসূচির নিয়মিত চিত্র। কিন্তু এই দিনে বেশ কিছু ঘটনা ঘটল যা আসলে আমাদের দেশের সাধারণ জনগণ কোনদিনও প্রত্যাশা করেনি এবং যে ঘটনাটি আমাদের আরো আতঙ্কিত করে তুলল।
আমরা যারা চাকরি করি, ব্যবসা করি বা অন্য যে কোন পেশার সাথে জড়িত তাদের কাছে এই সকল অবরোধ বা হরতাল বা জ্বালাও পোড়াও সত্ত্বেও নিয়মিত সময়মত কর্মস্থলে যোগ দিতে হয়। কিন্তু আজ যা ঘটল তার পর আমি খুবই শঙ্কিত বোধ করছি।
দুপুর বেলা প্রতিদিনকার মত আজও প্রথম আলোর ইন্টারনেট সংস্করণ দেখছিলাম চলতি খবর জানার জন্য। সেখানে একটা খবরের শিরোনাম দেখে পড়তে শুরু করলাম। শিরোনামটা ছিল “ছাত্রলীগের সন্দেহরোষে পথচারী নিহত”। বিস্তারিত পড়ার পর আমি কিছুটা থমকে গেলাম। কেউ বিশ্বাস করবেন কিনা জানি না, আমার তখন প্রচন্ড পরিমান কাঁদতে ইচ্ছা করছিল, আর সেই সাথে ছিল প্রচন্ড এক চাপা ক্ষোভ। খবরটা পড়ার পর থেকে মনটা প্রচন্ড রকম খারাপ হয়ে আছে এবং সেই সাথে একটা শঙ্কা তৈরি হয়েছে যে আমিও কি তাহলে নিরাপদ না। আমি একটু আগে মানে ১০ ডিসেম্বর ২০১২ এর রাত ১ টা ৩০ মি এ প্রথম আলো পত্রিকাটির ইন্টারনেট সংস্করণটি আবারো চালু করলাম। সেখানে এখন যেটা দেখলাম সেটা দেখে আসলে আমার ক্ষোভটা আরেকটু বেড়ে গেল। যেখানে দুপুরে শিরোনাম দেখলাম এক রকম আর এখন সেটা হল “অবরোধে চাপাতির কোপে যুবক নিহত,ছাত্রলীগকে সন্দেহ”। আমি আসলে ঠিক বুঝলাম না ঠিক কি কারনে এখন শিরোনামটি পরিবর্তন হয়ে গেল। প্রথম আলো কি তাহলে আসলেই সরকারের এজেন্ট হয়ে গেল?
রাতে টিভিতে খবরে দেখলাম পুলিশ কয়েকজন পথচারীকে পিটাচ্ছে যারা তাদের কর্মস্থলের দিকে যাচ্ছিল পায়ে হেটে কোন পরিবহণ না পেয়ে। তাদের কারো ঘাড়ে আছে ব্যাগ অথবা কারো হাতে ছিল অফিসের কোন কাগজপত্র। আসলে এখন ঘটনাটা এমন হয়ে দাড়িয়েছে যে বিরোধীদল হরতাল বা অবরোধ কর্মসূচী দিলে সরকার এবং পুলিশই সেটা সফল করছে এবং এই ধরনের লাঠিপেটা এবং খুনের মাধ্যমে জনগনকে বাধ্য করছে যাতে এই সমস্ত দিনগুলোতে যাতে বাড়ি থেকে বের না হয়।
পরিশেষে বলতে চাই আমি বাংলাদেশের রাজনীতি, সকল রাজনৈতিক দল এবং তাদের মুখোশধারী নেতাদেও প্রচন্ড রকম ঘৃণা করি। আমার কেন যেন মনে হচ্ছে বাংলাদেশে খুব তাড়াতাড়ি একটি গৃহযুদ্ধ শুরু হতে যাচ্ছে যদি না এই ধরনের নোংরা ও প্রতিহিংসার রাজনীতি বন্ধ না হয়। এখন আমাদের দেশের জনগন আর কোনভাবেই কোন অবস্থাতে নিরাপন নয়। মহান আল্লাহর কাছে একটাই প্রার্থনা দয়া করে এদের সুবুদ্ধি দাও এবং আমাদের দেশের স্বাধীনতা যেন অক্ষুন্ন থাকে।

Thursday, June 21, 2012

বাসযোগ্য ঢাকা চাই

ঢাকা, বাংলাদেশের রাজধানী। দেশের সকল কর্মকাণ্ডের প্রাণকেন্দ্র। আমদের সকলের প্রিয় এবং প্রানের শহর। বর্তমানে জনবহুল শহরগুলোর একটি আমাদের এই ঢাকা। কিন্তু ২০ থেকে ২৫ বছর আগেও ঢাকার রুপ এমন ছিল না। আমার মনে আছে, আগে আমি যেখানে থাকতাম সেখানে চারপাশে ছিল গাছপালা, বিশাল মাঠ যেখানে বিকাল হলেই বিভিন্ন খেলাধুলায় মেতে উঠত সকল বয়সের মানুষ। এখব অবশ্য এমন দৃশ্য দেখা পাওয়া ভার। দিন দিন পিপীলিকার মত মানুষ বাড়ছে ঢাকা শহরে। কোথাও একবিন্দু জায়গা খালি নেই। আস্তে আস্তে আমাদের এই প্রাণের শহরটি একটি বসবাসের অযোগ্য শহরে পরিণত হচ্ছে। প্রাণভরে নিঃশ্বাস নেওয়ার মত কোন জায়গা নেই। চারিদিকে খালি কনক্রিটের পাহাড় এবং যান্ত্রিক জীবন। ঘর থেকে রাস্তায় বের হলে অসহনীয় যানজট আর বাড়িতে বা অফিস এ মাত্রারিক্ত লোডশেডিং। তার উপর ঢাকার সকল উন্মুক্ত স্থানে প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা। এ শহরের মানুষের সুস্থ বিনোদনের কোন স্থান নেই। দিনে দিনে এ শহরের মানুষগুলো হয়ে যাচ্ছে অতিমাত্রায় যান্ত্রিক। এ কারনে এ শহরের মানুষের মধ্যে নুন্নতম মূল্যবোধ বলতে কিছু নেই। এভাবে চলতে থাকলে আর কিছুদিন পর আমরা সকলেই এক একটি যন্ত্রে রুপান্তরিত হব।

বর্তমানে আমদের ঢাকার এই অবস্থা হওয়ার কারন আমরা সকলেই জানি। দেশের সকল মানুষের ঢাকামুখী হওয়া, সকল প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডের মূলকেন্দ্র হওয়া, দেশের অন্যান্য শহর, জেলা, উপজেলাসমুহতে সকল ধরনের সুযোগ সুবিধা না থাকার কারনে ঢাকার আজ এই অবস্থা। 

তবে আমরা চাইলেই আমাদের এই ঢাকাকে আবার আমাদের প্রিয় এবং সুন্দর করে ফিরে পেতে পারি। এর জন্য প্রয়োজন আমাদের স্বদিচ্ছা ও সচেতনতা এবং প্রশাসনিক উদ্যোগ। আমার কাছে মনে হয় আমরা যদি নিচের কাজগুলো করতে পারি তাহলে হয়ত আমাদের ঢাকার পুরনো চেহারা আবার ফিরে আসবে।

  • ঢাকা শহর থেকে বিভিন্ন কল কারখানা, অফিস, আদালত, ব্যাংক, বীমা প্রতিষ্ঠান সমূহ ঢাকার অদূরে কোন স্থানে স্থাপন করা।
  • ঢাকায় অবস্থিত বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহের কার্যক্রম দেশের বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে দেওয়া এবং প্রত্যেক জেলা সমূহে স্থানীয় জনগণকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজের সুযোগ করে দেওয়া।
  • বিভিন্ন জেলাসমূহে আত্মকর্মসংস্থানের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হওয়ার ব্যাপারে প্রশিক্ষণ প্রদান ও উদ্বুদ্ধ করা।
  • দেশের প্রত্যেকটি জেলা ও উপজেলার অবকাঠামোগত উন্নয়ন সাধন করা।
  • ঢাকা শহরে বসবাসের জন্য একটি নীতিমালা করা যাতে করে শহরের জনসংখ্যা ও পরিবেশ সহনীয় পর্যায়ে থাকে।
  • ঢাকার যানজট নিরসনে বাক্তিগত গাড়ি সমূহের রাস্তায় বের হওয়ার একটি রোস্টার করে দেওয়া যাতে করে রাস্তায় যানবাহনের চাপ কম থাকে। যেমন - সপ্তাহের ৬ দিনকে ২ ভাগ করে ৩ দিন জোড় সংখ্যার লাইসেন্সধারী গাড়ি সমূহ এবং ৩ দিন বেজোড় সংখ্যার লাইসেন্সধারী গাড়ি সমূহ চলাচল করলে আমার মনে হয় ঢাকার যানজট অনেকটা কমে যাবে।
  • সিএনজি গ্যাস শুধুমাত্র গনপরিবহনের জন্য বরাদ্দ থাকবে, বাক্তিগত গাড়িতে তা সম্পূর্ণ নিসিদ্ধ করতে হবে কারন যারা নিজেদের জন্য গাড়ি কিনেন তাদের অবশ্যই তেল দিয়ে গাড়ি চালানোর মত সামর্থ্য আছে।
  • ঢাকার সকল উন্মুক্ত স্থানসমূহ দখলমুক্ত করতে হবে।
  • কোন আবাসিক এলাকাতে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান স্থাপন করা যাবে না।

আমার কাছে মনে হয় এই সকল বিষয়গুলো যদি আমরা এবং আমাদের সরকার মিলে বাস্তবায়ন করতে পারি তাহলে হয়তো আমারা আমাদের আগের ঢাকাকে ফেরত পেতে পারি। আসুন আমরা সকলেই আমাদের এই প্রিয় ঢাকাকে সুন্দর করে আমাদের বাসযোগ্য করে গড়ে তোলার চেষ্টা করি।

Tuesday, December 6, 2011

মা তোমাকে ভালবাসি

এই ওঠ, অনেক বেলা হয়ে গেছে
কি হল কলেজে যাবি না?
নাস্তা খেয়ে যাবি না?
বাবা, কখনও খারাপ কাজ করবি না।
কখন বাসায় আসবি সোনা আমার?
শরীর খারাপ লাগছে বাবা?
বাবা তোর মন খারাপ?
এই তো আমার বাবাটা অনেক ভাল।

এই কথাগুলো এখন আর কেউ বলে না,
তুমি কি জানো আমি এখন বড্ড একা।
আমাকে কেউ আর ঘুম থেকে ডাকে না,
বলে না কলেজ যাব কিনা।
কেউ খোজ নেয়না কেমন আছি আমি,
কোথায় আছি বা কি করছি।

তুমি কি মা আমাকে এখন ও দেখ
ঐ আকাশ থেকে তারা হয়ে?
তুমি কি দেখ আমি কি করি
কোথায় যাই, কেমন থাকি?
কেন তুমি আমার কাছে আসনা,
আগের মত আমাকে ভালবাসনা।

তুমি তো আমাকে ফাঁকি দিয়ে চলে গেলে,
বললে না তো যে বাবা আমি যাচ্ছি।
বলে তো গেলেনা যে আমি কিভাবে থাকবো
কি করে চলব, কার কাছে সব কিছু বলব।
কেন তুমি আমার সাথে দেখা না করে চলে গেলে
কেন তুমি লুকিয়ে লুকিয়ে চলে গেলে?

মা তোমাকে অনেক ভালবাসি
তোমাকে আমি আজীবন ভালবেসে যাবো।
তুমি ভাল থেকো মা
অনেক অনেক অনেক ভাল।

উত্তর খুজে পাই না


১৯৭১ এর অনেক বছর পর আমার জন্ম
তাই  মুক্তিযুদ্ধ দেখার ভাগ্য আমার হয়নি।
আমি দেখিনি ৫২ এর ভাষা আন্দোলন,
৬৬ এর ছয় দফা কিংবা ৬৯ এ গন অভ্যুত্থান। 
দেখা হয়নি ২৫ মার্চ এর বর্বরতা,
১৪ ই ডিসেম্বরের বুদ্ধিজীবি নিধন 
এবং ১৬ ই ডিসেম্বরের বিজয় উল্লাস।
আরো অনেক কিছু দেখা হয়নি। 
দেখতে দেখতে ৪০ বছর কেটে গেল,
আজ আমরা স্বাধীন দেশ এর নাগরিক।


কিন্তু এ কোন স্বাধীন দেশে আমরা বাস করি?
যেখানে মানুষের জীবনের কোন মূল্য নেই
যেখানে সন্ত্রাসীর হাতে খুন হয় মুক্তিযোদ্ধা।
যেখানে বিচার হয়না রাজাকারের 
চলে তাদের পক্ষে সাফাই।
য়েখানে বোনের কোন নিরাপত্তা নেই 
নেই কোন কাজের পরিবেশ।
সেটা কি আসলে স্বাধীনতা?


স্বাধীনতা মানে কি ইতিহাস বিকৃতি?
স্বাধীনতা মানে কি দুই দলের দুই নেতা নীতি?
স্বাধীনতা মানে কি ক্ষমতার রাজনীতি?
স্বাধীনতা মানে কি খুনাখুনি, হানাহানি
জ্বালাও পোড়াও করে সম্পদ নষ্ট?
স্বাধীনতা মানে কি জনগনকে কষ্ট দিয়ে
নিজ নিজ স্বার্থ হাসিল করা? 
স্বাধীনতা মানে কি বীর মুক্তিযোদ্ধার
পেটের তাড়নায় রিকশা চালনা? 
স্বাধীনতা মানে আসলে কি?
আমি আজও এর উত্তর খুজে পাই না।



Sunday, July 24, 2011

যাত্রা শুরু হল

আমি আজ থেকে আমার ব্লগ এ লেখা শুরু করলাম। চেষ্টা করব প্রতিদিন লেখার জন্য। আশা করি সবার সহযোগিতা পাব। ধন্যবাদ